নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দখলবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। এর মধ্যেই বরিশাল-২ (বানারীপাড়া–উজিরপুর) আসনের বিএনপি মনোনয়নপ্রত্যাশী সরদার সরফুদ্দিন সান্টুর বক্তব্যে নতুন করে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে এই বিএনপি নেতা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, তাঁর নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি করেছেন এবং তিনি নিজেই তাদের “চাঁদাবাজি করতে দিয়েছেন।”
ভিডিওতে সান্টুকে বলতে শোনা যায়
“গত এক বছর বিএনপি নেতাকর্মীরা যে চাঁদাবাজি করেছে, সেটা আমি তাদের করতে দিছি। কারণ গত ১৭ বছর নেতাকর্মীরা কিছু খায় নাই। অবস্থা কিন্তু ভালো না। দল ক্ষমতায় না এলে কিন্তু কিছু পাবেন না।”
এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর বরিশালজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ক্ষমতার বাইরে থেকেও বিএনপি নেতাকর্মীরা এলাকায় দখল ও লুটপাটের রাজনীতি চালাচ্ছে। এতে সাধারণ ব্যবসায়ী ও গ্রামীণ জনগণ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, উজিরপুরের গুঠিয়ায় সান্টুর নিজস্ব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। ওই সভার ভিডিওই এখন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি গোলাম মাহমুদ মাহবুব মাস্টার জানিয়েছেন, “সভাটি হয়েছিল সান্টুর বাইতুল ভিউ কনভেনশন হলে। মুখ ফসকে তিনি এ কথা বলেছেন।” তবে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মৃধা বলেছেন, ভিডিওটি ‘কাটপিস’ হতে পারে।
অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও মনোনয়নপ্রত্যাশী কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু জানিয়েছেন, “ভিডিওটি কোনো কাটপিস নয়। সান্টু একের পর এক বেফাঁস কথা বলে দলকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছেন।”
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সান্টুর এই বক্তব্য বিএনপির ভেতরের ‘চাঁদাবাজির রাজনীতি’কে উন্মোচন করেছে। জনগণের পকেট থেকে অর্থ লুটে নেওয়ার এই সংস্কৃতি বিএনপির নেতৃত্বে গভীরভাবে প্রোথিত, যা দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন এখন স্পষ্ট:
“যারা ক্ষমতায় না থেকেও চাঁদাবাজি চালায়, তারা ক্ষমতায় গেলে দেশের কী হবে?”